দেশে শিক্ষিত মানুষ ও আর্থিকভাবে স্বাবলম্বীদের মধ্যে সিজারিয়ানের (সি-সেকশন বা অস্ত্রোপচার) হার বেশি। এটা সবচেয়ে বেশি হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে। আর সি-সেকশনের হার খুলনা অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি।

রোববার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে নাগরিকমঞ্চ ও বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় এ তথ্য জানানো হয়। অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান সেকশন বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশ ও তার বাস্তবায়ন-শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলোজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ওজিএসবি) সভাপতি অধ্যাপক ফারহানা দেওয়ান বলেন, সিজারিয়ান যে সবসময় অকারণে করে তাও নয়। তবে অবারিত সিজারের ফলে দেখা যায় মানুষজন হাসপাতালেও যেতে চায় না। তারা ভাবে হাসপাতালে গেলেই সিজার করাবে। আবার অনেকে হাসপাতালে এসে জোর করে সিজার করার জন্য। তখন তাদের কাউন্সেলিং করা হয়। জোরাজুরিতেও অনেক সময় করতে হয়।

অনুষ্ঠানে অন্য বক্তারা বলেন, শহরাঞ্চলের মতো গ্রামেও সি-সেকশনের প্রবণতা ও সংখ্যা বেড়েছে। তাই অপ্রয়োজনীয় সি-সেকশন বন্ধের জন্য জনগণের মধ্যে সচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করা দরকার। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের মতো স্থানীয় নাগরিক সংগঠনগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। ধাত্রীদের আরও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণের কথা বার বার আলোচনায় উঠে আসে। বক্তারা আরও বলেন, যেসব প্রাইভেট ক্লিনিকে লেবার রুম নেই তাদের জন্য আইন করা উচিত, যাতে করে তারা সিজারিয়ান সেকশন করতে না পারে। হাইকোর্টের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যে গাইডলাইন প্রণয়ন করেছে, সেটি স্বাস্থ্য খাতের সঙ্গে জড়িত সব ব্যক্তি এবং সংগঠনের কাছে পৌঁছে দেওয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়।

হেলথ ওয়াচের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য রাশনা ইমাম বলেন, সিজারিয়ান সেকশন করা হয় জীবনরক্ষার জন্য। কিন্তু সিজারিয়ান সেকশনের হার এত বেশি হওয়ার পরও মাতৃ মৃত্যুর হার কমছে না। এ মৃত্যুর হার না কমার জন্যই আমরা মনে করছি এ সি- সেকশনগুলো অপ্রয়োজনীয় বা মাত্রাতিরিক্ত। আলোচনায় আরও অংশ নেন ওজিএসবির সাবেক সভাপতি ফেরদৌসী বেগম, সাধারণ সম্পাদক সালমা রউফসহ আইনজীবী, সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক, সাংবাদিক ও উন্নয়ন কর্মীরা।